সরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার সহজ উপায়

সরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার সহজ উপায় নিয়ে যদি আপনি জানতে আগ্রহী হোন এবং অল্প পরিশ্রমে অত্যাধিক টাকা উপার্জনের কথা চিন্তা করে থাকেন, তাহলে আজকের আর্টিকেলটি শুধু আপনার জন্যে। কেননা, এখানে আপনি লক্ষাধিক টাকা ইনকাম করতে পারবেন প্রতিমাসে অনায়াসেই। তাই, দক্ষিণ কোরিয়া হবে আপনার জন্য বেস্ট অপশন।




দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার জন্যে আপনাকে বেশ কয়েকটি ধাপ পার করতে হবে। তারপর আপনি প্রবেশ করতে পারবেন আশা করা যায়। চলুন সরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়া সম্পর্কে সমস্ত বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক। পুরো আর্টিকেলটি জুড়ে সাথেই থাকুন

পেজ সূচিপত্র ঃ সরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার সহজ উপায়

সরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার সহজ উপায় 

স্বল্প খরচে সরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার সহজ উপায় রয়েছে। তার মধ্যে হলো, ভাষা পারদর্শী পরীক্ষা ও লটারী। এগুলোর মাধ্যমে গেলে আপনার উচ্চ বেতন ও ভাতার পাশাপাশি, উন্নত কাজের পরিবেশ নিশিত হয়। নিম্নে ভাষা পারদর্শী ও লটারী নিয়ে আলোচনা করা হলো।
    1. ভাসা পারদর্শীঃ কোরিয়ান ভাষা পারদর্শী সরকারিভাবে BOESL(Bangladesh Overseas Employment and Services Limiteed) প্রত্যেক বছর ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি বা শেষ দিকে সার্কুলার ছেড়ে থাকে।
    2. আবার, সরকারিভাবে প্রতিবছর এপ্রিল থেকে মে মাসের মধ্যে বোয়েসেলের অধীনে লটারী সার্কুলার ছাড়া হয়ে থাকে। এখন যদি একজন ব্যক্তি ভাষা পারদর্শী বা লটারীর মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়া যেতে চায় তাহলে, তাকে নিম্নক্ত ধাপ গুলো অনুসরণ করতে হবে। 
    • দক্ষিণ কোরিয়ার সার্কুলার প্রকাশ হওয়ার পরে বোয়েসেল এর ওয়েবসাইট থেকে নিবন্ধণ করতে হয়।
    • যদি নিবন্ধণ কার্যক্রম সম্পন্ন হয় তবে, ২০০ নং এর কোরিয়ান ভাষা পরীক্ষা দিতে হয়।
    • পরীক্ষায় পর্যাপ্ত মার্ক পেলে প্রার্থীকে স্কিল টেষ্ট পরীক্ষা দিতে হয়।
    • পরবর্তীতে এসকল পিরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে, বোয়েসেলে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট এবং মেডিকেল ফিট সনদপত্র জমা দিতে হয়।
    • যদি রোস্টারে নাম আসে তবে, আপনার ভিসা ফরম সাথে সকল ডকুমেন্টস এবং বোয়েসেল ফি জমা দিতে হবে। 
    • পরবর্তীতে এইচআরডি কোরিয়া কর্তৃক আপনার সিভি সংগ্রহ করা হলে বোয়েসেলের আওতায় দুই সপ্তাহের ট্রেনিং করতে হয়।
    পরবর্তীতে, ২ বছরে মোট আটটি ভিসা নামে, এর মধ্যে আপনার নাম আসলে আপনাকে দক্ষিণ কোরিয়া পাঠানো হবে।

    দক্ষিণ কোরিয়া স্টুডেন্ট ভিসা 

     সরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার সহজ অনেক উপায় রয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে স্টুডেন্ট ভিসা। দক্ষিণ কোরিয়ার পড়াশোনার জন্য যেতে চাইলে, স্টুডেন্ট ভিসায় যেতে হয়। কেননা দক্ষিণ কোরিয়াতে রয়েছে এশিয়ার মধ্যে সেরা সেরা ইউনিভার্সিটি গুলো। প্রতিবছর দক্ষিণ কোরিয়ার ইউনিভার্সিটি গুলো বাংলাদেশ সহ  পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে স্টুডেন্ট ভিসা দিয়ে থাকে।

    দক্ষিণ কোরিয়া স্টুডেন্ট ভিসার শর্ত

    দক্ষিণ কোরিয়া স্টুডেন্ট ভিসা পেতে হলে কিছু শর্ত রয়েছে যেগুলো পালন না করলে আপনি দক্ষিণ কোরিয়া স্টুডেন্ট ভিসায় যেতে পারবেন না। আসুন, তার মধ্যে প্রধান তিনটি শর্ত জেনে নেই।
    •  ভাষাগত যোগ্যতা
    •  শিক্ষাগত যোগ্যতা
    •  ব্যাংক স্টেটমেন্ট 
     প্রধানত এই তিনটি শর্ত আপনাকে পূরণ করা লাগবে স্টুডেন্ট ভিসা পেতে হলে।

     ভাষাগত যোগ্যতা 

     দক্ষিণ কোরিয়া স্টুডেন্ট ভিসার প্রথম শর্তটি হলো ভাষাগত যোগ্যতা। ভাষাগত যোগ্যতা অর্জনের জন্য আপনাকে দুটি অপশন দেয়া হবে। যেগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে  ইংলিশ মিডিয়াম পড়াশোনা এবং অপরটি হচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়ার ভাষায় পড়াশোনা। 

     যদি আপনি দক্ষিণ কোরিয়া ইংলিশ মিডিয়ামে পড়াশোনা করতে চান তাহলে, আপনাকে অবশ্যই আইইএলটিএস স্কোর হতে হবে ৫. ৫ পয়েন্ট। পক্ষান্তরে যদি আপনি দক্ষিণ কোরিয়ায় টপিক করছে পড়াশোনা করতে চান তাহলে আপনাকে মিনিমাম টপিক লেভেল ৩ পাস করতে হবে। তবে ইউনিভার্সিটি ভেদে  ৪ লেভেলও হয়ে থাকে। এর নিচে মার্ক হলে দক্ষিণ কোরিয়া স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করা যাবে না।

     শিক্ষাগত যোগ্যতা

    আপনি যদি দক্ষিণ কোরিয়া স্টুডেন্ট ভিসায় যেতে চান তাহলে, আপনাকে অবশ্যই শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি বা এইচএসসি পাশ হতে হবে। এর পাশাপাশি আপনার উভয় পরীক্ষার মার্ক কমপক্ষে ২. ৮০ বেশি হতে হবে। তাহলে এ শর্তটি পূরণ হবে।

     ব্যাংক স্টেটমেন্ট 

     দক্ষিণ কোরিয়া স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার ৩ নাম্বার শর্তটি হল ব্যাংক স্টেটমেন্ট। এটি আপনাকে অবশ্যই লাগবে। দক্ষিণ কোরিয়া স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার জন্য আপনাকে কমপক্ষে ১৮ হাজার ডলার,যা কিনা বাংলাদেশী টাকায় হিসাব করলে দেখা যায় ১৬ থেকে ১৮ লক্ষ টাকার মত ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখাতে হবে। ব্যাংক স্টেটমেন্টটি আপনার হতে হবে এমন কোন কথা না। সেটি হতে পারে,আপনার বাবা বা মায়ের বা অন্য কোন অভিভাবকের।

    দক্ষিণ কোরিয়া টুরিস্ট ভিসা

     আপনারা যারা দক্ষিণ কোরিয়াতে ভ্রমণে যেতে চান, তাদের দক্ষিণ কোরিয়ায় টুরিস্ট ভিসায় যেতে হবে। এবং সেখানে আপনি চাইলে ৩০ দিন থেকে সর্বোচ্চ 90 দিন পর্যন্ত ভ্রমণ করতে পারবেন। এক্ষেত্রে বলে রাখা ভালো, আপনি যদি সেখানে ৩০ দিনের বেশি থাকতে চান সেক্ষেত্রে, আপনাকে আপনাকে বারটি কি দিয়ে সেখানে থাকতে হবে।

    দক্ষিণ কোরিয়া স্টুডেন্ট ভিসা খরচ কত

     দক্ষিণ কোরিয়া স্টুডেন্ট ভিসায় যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট, আইইএলটিএস ও ও টপিক দক্ষতা অর্জন করতে হয়। এগুলো সম্পূর্ণ খরচ আপনাকেই করতে হবে। এছাড়াও এম্বাসি থেকে কাগজপত্র, যাতায়াতের ভাড়া সবকিছু মিলিয়ে আপনার ৫০০০ টাকার মত খরচা হতে পারে।

     পরবর্তীতে আপনাকে ইউনিভার্সিটীতে আবেদন করতে হবে। ইউনিভার্সিটিতে আবেদন করার জন্য সেখানে আপনাকে ৬ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ করতে হতে পারে। সবমিলিয়ে বলা যায় যে, দক্ষিণ কোরিয়া স্টুডেন্ট ভিসায় যাওয়ার জন্য আপনাকে ৬ থেকে সাত লক্ষ টাকার মতো খরচ করতে হবে।

    দক্ষিণ কোরিয়ায় কাজের ভিসা। ওয়ার্ক পারমিট ভিসা 



    দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার সহজ উপায় গুলোর মধ্যে অন্যতম ওয়ার্ক পারমিট ভিসা। সাধারণত যারা বিভিন্ন কাজের উদ্দেশ্যে দক্ষিণ কোরিয়ায় যেতে চাই, তাদেরকে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যেতে হয়। এক্ষেত্রে আগ্রহী কর্মীগণ কোরিয়ার অ্যাম্বাসের মাধ্যমে খুব সহজেই ওয়ার্ক পারমিট ভিসার মাধ্যমে আবেদন করতে পারে। বাংলাদেশ থেকে ইতিমধ্যে অনেক লোক ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় দক্ষিণ কোরিয়ায় গেছেন।

    সরকারিভাবে যেতে খরচ কত 

     সাধারণত সরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার জন্য খরচের খাতাটা কিছুটা কম। আপনি যদি ভাষা পারদর্শী পরীক্ষার মাধ্যমে যেতে চান তাহলে নিবন্ধনের জন্য চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা লাগবে।এবং লটারির জন্য লটারি কাটলে আপনাকে ৫০০ টাকার মতো লাগে। এছাড়া আনুষাঙ্গিক কিছু খরচ রয়েছে। সব মিলিয়ে বলা যায় সাত থেকে আট লক্ষ টাকার মত খরচ হবে।

    দক্ষিণ কোরিয়ার কাজের বেতন কত 

     দক্ষিণ কোরিয়া এমন একটি দেশ যেখানে তারা স্বল্প পরিশ্রমে লক্ষাধিক  টাকা পরিশোধ করে থাকে কর্মীদের প্রতিমাসে । দক্ষিণ কোরিয়ায় কর্মীদের ন্যূনতম মাসিক বেতন ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। আর যদি ওভার টাইম করে সেক্ষেত্রে ৩ থেকে সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা হতে পারে মাসিক। তাছাড়া দক্ষিণ কোরিয়াতে সবচেয়ে বেশি বেতন পেয়ে থাকেন, যারা আইডি খাতে কাজ করেন। তাদের মাসিক আয় আনুমানিক ৭ থেকে ৮ লক্ষ টাকার উপরে।

    দক্ষিণ কোরিয়ার মুদ্রার নাম কি? দক্ষিণ কোরিয়ান মুদ্রা বাংলাদেশী কত টাকা


    দক্ষিণ কোরিয়ার মুদ্রার নাম উয়ন বলা হয়। ১ উয়ন সমান ০.০৮৫ বাংলাদেশী টাকায়। দক্ষিণ কোরিয়ার ১০০০ উয়ন সমান বাংলাদেশী টাকায়  ৮৪. ৫৪ টাকা। বাংলাদেশের তুলনায় দক্ষিণ কোরিয়া টাকার মান অনেক কম। টাকার মান কম এই কারণে সামান্য কিছু কিনতে গেলেও বেশি টাকা গুনতে হয় তাদের।

    শেষ কথা-সরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার সহজ উপায়

    সরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার সহজ উপায় সম্পর্কে উপরিউক্ত সকল তথ্যানুসারে
    জানতে পারলেন। দক্ষিণ কোরিয়া একটি সমৃদ্ধ এবং অর্থনৈতিক দিক থেকে খুবই শক্তিশালী সম্পূর্ণ একটি দেশ। তাই অল্প খরচে প্রশিক্ষণ নিয়ে, স্বল্প পরিশ্রমে উচ্চ বেতন নিশ্চিত করতে চাইলে, দক্ষিণ কোরিয়া হবে আপনার জন্য অন্যতম উপায়। আমাদের পোস্টটি পড়ে আপনি যদি উপকৃত হোন তাহলে অবশ্যই,অন্যদের সাথে শেয়ার করে পাশে থাকবেন।


    এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

    পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
    এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

    অর্কিড আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

    comment url